রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেল থেকে বুধবার (৬ মার্চ) রাত পর্যন্ত বিভিন্ন দোকান থেকে তারা চাঁদাবাজি করেছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ চার নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদিক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবণ, নবাব আবদুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাশফিক আল তৌহিদ এবং মাদার বখ্শ হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামিম খান।
এদের মধ্যে লাবণ ও তৌহিদ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। অন্যদিকে সাদিক এবং তামিম শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী। তবে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ একাডেমিক ভবন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবন, পুরাতন শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বসা অন্তত ১৫টি ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চাঁদা আদায় করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ডাব বিক্রেতা বলেন, ‘চার-পাঁচজন লোক এসে তার কাছে ১ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি ‘চাঁদা’ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন ছাত্রলীগ নেতারা এখানে ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে হুমকি দেন। পরে টাকাও নেন।’
এক খাবার বিক্রেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে ‘চাঁদা’ দাবি করে। তাদের সবাই আমার পরিচিত। লাবণ ভাই, সাদিক ভাই, তৌহিদ ও তামিম এসেছিল। আমার থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছে।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদিক, ‘এই রকম কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। বরং আমি আর লাবণ দোকানে দোকানে গিয়ে বলে এসেছি, আমার নামে কেউ চাঁদাবাজি করতে আসলে যেন কল দেয়।’
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবণ বলেন, ‘আমি কয়েকদিন ধরে সারাদিন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছিলাম। এর আগেও শুনেছি আমার নাম করে কেউ কেউ টাকা আদায় করেছে। তাই কয়েক দোকানিকে বলেছি, যারা আমার নাম করে চাঁদা নিতে আসে তাদের আটকে রেখে আমাকে কল দিতে।’ এ ছাড়া ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ ও তামিমও চাঁদাবাজির বিষয় অস্বীকার করেন।
সার্বিক বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, সাদিক, লাবণ ও তৌহিদের মধ্যে কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে তামিম গেছে কিনা আমি জানি না। যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বহিষ্কার করা হবে।