রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে খাবারের দোকানির কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। দোকানিকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আপাতত কিছু টাকা দিয়ে দোকান চালান। আপনাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না।’ এ-সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড কালবেলা প্রতিনিধির হাতে এসেছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় ওই দোকানির কাছে চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠেছে।দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান সোহাগ এবং শহীদ হাবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ।
অডিও রেকর্ডে ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ ও মিনহাজ দোকানিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘ভাইয়ের নাম মিনহাজ। আমার নাম সোহাগ। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক সম্পাদক। এই বিষয়টা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মাথায় আছে। যেহেতু দুই দিক থেকে এসেছি, এখন বিষয়টা বুঝতে হবে। যেহেতু টাকা দেওয়ার তারিখ নিছেন।’তারা আরও বলেন, ‘আগেও একদিন এসেছিলাম। আপনি বললেন, সমস্যা নাই মিনহাজ ভাইয়ের সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে। আপনি যেহেতু কুলাইতে পারবেন না, তো ডেট নিয়েছেন কেন ১২ তারিখ পর্যন্ত।’
এ সময় দোকানি বলেন, ‘আমি দিতে পারব না। আমার যেখান থেকে টাকা পাওয়ার কথা ছিল, সেখান থেকে পাইনি। আমি আসলেই দিতে পারছি না। দিলে ঋণে পড়ে যাব।’তারপর মিনহাজ বলেন, ‘আপাতত কিছু টাকা দিয়ে দোকান চালান। আপনাকে কেউ ডিস্টার্ব করবে না। আপনি যদি মনে করেন সাংবাদিকদের বলবেন, এটা আপনার ভুল সিদ্ধান্ত।’
এ সময় সোহাগ দোকানিকে বলেন, ‘এই যে চাঁদাবাজির নিউজ হলো, আপনি দেখলেন। কী হইল? কিছুই হবে না।’
এরপর দোকানি বলেন, ‘আমি সিওর দিতে পারছি না। আমার কি লাখ টাকার ব্যবসা ভাই? পাঁচ টাকার ব্যবসা করতে এসে ১০ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে। আমি দোকানই বন্ধ করে দেব। ডাইনিংয়ে কাজ করি, ওই কাজই করব।’
পরে সোহাগ দোকানিকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কাল যদি দোকান বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কী হবে?’
তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের দুই নেতা। এ বিষয়ে জাহিদ হাসান সোহাগ বলেন, ‘রোজা রমজানের মাসে আমি কেন চাঁদা চাইতে যাব। সন্ধ্যায় তো ইফতারির সময়। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো কাজের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। আমার নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ রটানো হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে কথা বলতে হবে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জায়গা আছে।’