গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে ৩৬ জন অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের তেলিচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুনে ৩৬ জন দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার কাজী সফিকুল আলম। জেলা প্রশাসক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারের বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকায় এবং গ্যাস সিলিন্ডারটি কোনো ত্রুটিযুক্ত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কর্ম দিবসে কমিটি তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে তাদের মান ঠিকমতো আছে কি না এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হবে । যদি কোনো ব্যতয় থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
ঘটনার তদন্ত নিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে ডিলারশিপ আইনগতভাবে ঠিক আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য গণসচেতনতা দরকার। আইনের কাঠামো থেকে যারা ব্যত্যয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিয়ে সচেতনতা অনেক কম। ডিলার যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করেন, লিক হলে কী করণীয় গ্রাহক পর্যায়ে তারা যেন বলে দেন। গতকালের অগ্নি দুর্ঘটনায় কারও অবহেলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবহেলা থাকলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, স্থানীয় শফিক খান তার বাসার জন্য একটি গ্যাস সিলিন্ডার আনেন। পরে গ্যাস সিলিন্ডারটি চুলার সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার পর থেকে গ্যাস বের হতে থাকে। এসময় ভয়ে সিলিন্ডারটি তিনি বাইরে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেন। এ সময় ওই স্থানে একটি মাটির চুলার আগুন থেকে গ্যাস সিলিন্ডারের বের হওয়া গ্যাসে আগুন লেগে যায়। এতে রাস্তায় থাকা নারী, পুরুষ ও শিশু সহ ৩৬ জন অগ্নিদগ্ধ হন। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর দেখে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।