আওয়ামীলীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। ২০০৮ সালে যখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে তখন যে ব্যক্তির লক্ষ টাকা সঞ্চয় ছিল আজ তার হাত কপর্দকহীন শুন্য। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুরো ব্যাংকিং খাতকে কয়েকটি পরিবারের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়ে সরকারীদলের লোকেরা অর্থ লুট ও পাচার করে ইউরোপ আমেরিকায় নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। ফাইভ পার্সেন্টের এই ডামি সরকার বিগত ১৬ বছরে দেশের সকল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন এবি পার্টির নেতারা।
অনিয়ম, দূর্নীতি ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের প্রতিবাদে আয়োজিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এবি পার্টির নেতারা এই দাবি করেন।
এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মুল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল ও সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির ফলে আজ দেশের ৪.৫০ কোটি মানুষকে ঋণ করে বাজার করতে হচ্ছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই শুধুমাত্র দলীয় বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়। যে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা হরণ করে পরিকল্পিত ভাবে লুটপাট করার উদ্দেশ্যেই সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমুহ দূর্বল করে দিয়েছে। এমনকি লুটপাট অব্যাহত রাখতে খেলাপী ঋণের সংজ্ঞা পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টার চাপে মাত্র দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ রিশিডিউল করার সুযোগ দেয়া হয়। যার ফলশ্রুতিতে আজ ৩৮ টি ব্যাংক রেড জোনে রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে। নতুন করে জনগণের টাকা লোপাটের পরিকল্পনা থেকে ব্যাংক একীভূত করণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খারাপ ব্যাংক গুলোর দায় দেনা বাজেট থেকে দেওয়ার উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। তার মানে সরকারি দলের কিছু দুর্বৃত্তের লুটপাটের দায় দেনা দেশের জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে ঋণ সরকার নিয়েছে তার কিস্তি পরিশোধের জন্য সরকার আবার ঋণ নিতে চাচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ বন্ধ না করে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বন্ধ করতে চাইছে সরকার যার ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে আমাদের কৃষি খাত। তিনি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লুটপাট, সরকারি দলের মন্ত্রী, এমপি ও কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অর্থ পাচারের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন অবিলম্বে এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। নইলে বাংলাদেশ শুধু দেউলিয়াই হবেনা, এই জাতি ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা হারাবে।
বিএম নাজমুল হক, উপস্থিত গণ মাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই সরকার শুধু অর্থিক খাত নয় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ বিচার বিভাগের কাছে মজলুমরা বিচার পায়না, কোন একটি সাধারণ নির্বাচনও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনা। কাজেই এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। তিনি জনগণকে এই সরকার পতনের আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহবান জানান।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, আমেনা বেগম, মশিউল আজম সাকিব, যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব শাহীনুর আক্তার শীলা, পল্টন থানার সদস্য সচিব আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।