ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার তালা সদরের আটারই গ্রামের আতিয়ার রহমান নামে এক দিনমজুরকে থানায় তুলে নিয়ে রাতভর মারপিটের ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীর স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন আতিয়ার রহমানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানায় পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে তাসলিমা বেগম জানান, শুক্রবার (৩১ মে) মধ্যরাতে তালা থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মোঃ আবুজার সহ সঙ্গীয় ফোর্স তার স্বামী আতিয়ার রহমানকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে যায়। ওই রাতে তার স্ত্রী ও ছেলে তালা থানায় গিয়ে আটকের কারন জানতে চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু জানায় না। আতিয়ার রহমানের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে পুলিশ দেখা করতে দেয়না। কোন পথ না পেয়ে থানা চত্তরে অপেক্ষায় করতে থাকেন তারা। রাত ১ টার দিকে হটাৎ আতিয়ারের চিৎকার ও কান্নাকাটি শুনতে পায়। এরপর রাত আনুমানিক ২ টার দিকে আতিয়ারকে পুলিশ থানা থেকে বের করে তালা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা দিয়ে আবার ওই রাতে থানাতে ফেরত নিয়ে আসে তাকে। যেটার সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতাল ও থানার ক্যামারায় ধারন করা রয়েছে। ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১ জুন সকালে ভুক্তভোগীর পরিবার জানতে পারে তাদের প্রতিবেশী মতিয়ার রহমানের তিন বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে তার স্বামীর নামে, যার মামলা নং ১/৭৫। ঘটনার পরদিন মামলা দিয়ে আতিয়ার রহমানকে কারাগারে দেয় পুলিশ। মামলার বাদী মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মুনজিলা খাতুন ও স্বাক্ষী স্থানীয় অহাব আলীর ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া। উল্লেখ থাকে যে, জিয়াউর রহমান জিয়ার সঙ্গে মুনজিলা খাতুনের পরকীয়া প্রেমের সর্ম্পক্য রয়েছে, কিছুদিন আগে জিয়া ও মুনজিলাকে আতিয়ার রহমান আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে, এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে জিয়ার পরিকল্পনায় মুনজিলাকে বাদী করে তার তিন বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিয়া কতৃক পুলিশ প্রভাবিত হয়ে তার স্বামীকে বেধড়ক মারপিট করে। কারাগারে দেখা করতে গেলে মারপিটের যে বর্ননা দিয়েছে সেটা রিতিমত শিহরতি হওয়ার মত। আতিয়ার পেশায় দিনমজুর। গ্রামে আজ অবধি তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দিতে পারিনি কেউ। তাছাড়া মামলার স্বাক্ষী জিয়ার সঙ্গে আতিয়ারের জমিজমা সংশ্লিষ্ট একটি কোন্দল ছিলো । যে ঘটনার রেশ ধরে জিয়া প্রায় তাদের প্রকাশ্যে হুমকি দিতো। মূলত জমি সংক্রান্ত এবং পরকীয়ার বিষয়টি দেখে নেওয়ায় ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে তাদের। তাছাড়া ইতোমধ্যে মামলার স্বাক্ষী জিয়া ভুক্তভোগীর স্ত্রী তাসলিমার নিকটে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। চাহিদা মতো টাকা পেলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছে। থানায় আটকে মারপিটের ঘটনটি যদি আইন বহির্ভূত হয় তবে তদন্তপূূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি। একই সাথে মিথ্যা মামলা থেকে রেহায় পেতে পুলিশ সুপারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।