ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারপিট ও ভাঙচুরের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
মামলায় বেসরকারি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষকসহ তিন শিক্ষার্থীকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন বিইউবিটির শিক্ষক শাহরিয়ার অর্ণব, শিক্ষার্থী পলজয়, সহাব তুর্জ ও সাইমি নাজ শয়ন।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢামেক হাসপাতালের অফিস সহায়ক আমির হোসেন (৫৩) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম শাহাবুদ্দিন শাহীন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদী এজাহারে অভিযোগ করে বলেন, সোমবার (৩১ আগস্ট) ঢামেকের ২০০ নং ওয়ার্ডে ডা.কানিজ ফাতেমা ইসরাত জাহানের তত্বাবধানে অজ্ঞাত একজন সড়ক দুর্ঘটনার রোগী ভর্তি হয়। পরে দিবাগত রাত ১ টা ১০ মিনিটের দিকে ঐ রোগী ভর্তি হয়। শনিবার সকাল ৭ টায় ঐ রোগী মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পরে শনিবার বিকেল ৪ টায় হঠাৎ করে নিউরোসার্জারী বিভাগের ২০১ নং ওয়ার্ডের ইমার্জেন্সী অপারেশন থিয়েটারের ডাক্তার আল মাশরাফিকে ৩০/৪০ জন লোক ঘিরে ধরে এলোপাথারি কিলঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে মারতে মারতে তার গায়ের ডাক্তারির এপ্রোনটি খুলে ফেলে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে হাসপাতালে থাকা বিভিন্ন জিনিষপত্র দিয়ে তাকে মারধর করতে থাকে।
বাদী আরও অভিযোগ করা হয়, সেই সময় ডাক্তার মো. ইমরান হোসেনসহ আমি এগিয়ে যাই এবং ডাক্তার ইমরান হোসেন স্যারকে কেন মারধর করা হচ্ছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের কাছ থেকে শুনতে চাইলে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের থেকে বাচাঁতে গেলে সেই সময় তাদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠে এই সেই ডাক্তার যে গতকাল ডিউটিতে ছিল। তখন তারা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ডা. ইমরানকে কোন কিছু বুঝে উঠার আগে হাসপাতালে থাকা বিভিন্ন জিনিষপত্র দিয়ে এলোপাথারিভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর শুরু করে এবং টেনে হিচঁড়ে মারতে মারতে তার গায়ের পোশাক ছিড়ে হাসপাতালের পরিচালক স্যারের অফিস রুমে নিয়ে যায় এবং সেখানে সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
এর আগে, গতকাল শনিবার অভিযুক্তরা ঢামেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারপিটে করেন । এ ঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা।
এরপর রোববার (১ সেপ্টেম্বর) মারধর ও জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনায় সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সকাল থেকেই জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে কর্মবিরতিতে যান তারা।
ঢামেক হাসপাতাল সরেজমিনে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের চেম্বার বন্ধ। আইসিইউ চালু থাকলেও নেই চিকিৎসক। সিরিয়াস রোগী থাকায় নার্সরা আছেন সেখানে। পুরা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।