বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে ডিজিটাল বাণিজ্যে অর্থ লেনদেনে আরও স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনলাইনভিত্তিক জনপ্রিয় অর্থ লেনদেন (পেমেন্ট) ব্যবস্থা পেপ্যালসহ অন্যান্য মাধ্যম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যে কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে লেনদেন সহজীকারণ ও সরলীকরণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাণিজ্যের সম্প্রসারণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই ক্রস–বর্ডার ডিজিটাল বাণিজ্য নীতিমালা, ২০২৪ এর খসড়া তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নীতিমালাটি গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাই দিয়ে অংশীজনের মতামত আহ্বান করা হয়েছে। এরপর এটি চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। খসড়ায় বলা হয়, দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাসহ সব উদ্যোক্তার পণ্য ও সেবার রপ্তানি বাড়ানো, এ খাতে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলাসহ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পণ্য ও সেবা আমাদনি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে এ নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, বাংলাদেশে ক্রস-বর্ডার ডিজিটাল বাণিজ্য সম্প্রসরাণে অন্যতম বাধা হচ্ছে পেপ্যালের মত আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য পেমেন্ট ব্যবস্থা না থাকা। এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে প্রস্তাবিত নীতিমালার আওতায় ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমকে দেশের প্রচলিত পেমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে আন্তসংযোগ করা হবে। একই সঙ্গে পেমেন্ট সিস্টেমে নির্ভরযোগ্যতা আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে ক্রস-বর্ডার এসক্রো সার্ভিসের প্রচলন করা হবে। এর আওতায় পেপ্যালসহ জনপ্রিয় পেমেন্ট ব্যবস্থাগুলো বাংলাদেশে চালু করা হবে।
দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অনেক তরণ-তরুণী অনলাইনে কাজ করছে। দেশে পেপ্যাল চালু থাকলে তাদের জন্য বিদেশ থেকে টাকা আনা সহজ হবে। এমন যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশে পেপ্যাল ব্যবস্থা চালু করতে ২০১০ থেকে অনুরোধ জানিয়েছে আসছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং। এছাড়া ডিজিটাল বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত অন্যরাও বেশ কয়েক বছর থেকে একই দাবি জানিয়ে আসছে। এর প্রেক্ষিতে ক্ষমতাচ্যূত আওমীলীগ সরকার বার বার উদ্যোগ নিলেও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা থাকায় পেপ্যাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম এতদিন চালু করতে আগ্রহী হয়নি বলে জানা গেছে।
খসড়া নীতিমালায় সাধারণ নিয়মাবলীর ক্ষেত্রে বলা হয়, ক্রস-বর্ডার ডিজিটাল বাণিজ্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) গ্রহণ করতে হবে। এর মাধ্যমে কোনো নকল বা ভেজাল পণ্য, কল্পিত পণ্য বা ধারণাগত পণ্য বা সেবা ক্রয়–বিক্রয় করা যাবে না। এছাড়া অনলাইন লটারি, জুয়া, বেটিং, গেমিং ইত্যাদির আয়োজন বা এর টিকিট বা টোকেন ইস্যু বা ক্রয়-বিক্রয় বা বিনিময় করা যাবে না। এ প্লাটফর্মে কেবলমাত্র বাংলাদেশে স্থাপিত কোম্পানিগুলোই বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে।