বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী বলেছেন, ইসকনের নামে আওয়ামী লীগ আবার নতুন করে আসার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত কোনো হিন্দু ভাইদের গায়ে ফুলের টোকাও পড়েনি।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ইসকন নিষিদ্ধের দাবি ও চট্টগ্রামে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
আহমদ আলী বলেন, লুট করা টাকা এখন খরচ করছে। সেসব ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। প্রশাসনের কাছে দাবি অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, ইসকন কোনো হিন্দু সংগঠন নয়, তারা একটি জঙ্গি সংগঠন। ভারত এই দেশকে বিপথগামী করার চেষ্টা করছে, সেটা সফল হতে দেওয়া যাবে না।
এ সময় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িকতার পক্ষে নই, তবে ৯০ শতাংশ মুসলিমের এই দেশে এমন কিছু মেনে নেওয়া হবে না। ইসকনকে অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। নইলে আগের মতো কেউ পালাবার পথও পাবেন না।
জালাল উদ্দিন বলেন, ইসকনের বিরুদ্ধে বলা মানে হিন্দু ভাইদের বিরুদ্ধে বলা নয়। আমাদের হিন্দু ভাইদের আমরা নিরাপত্তা দেব।
এর আগে, বৃহস্পতিবার জামিয়া রাহমিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের এক বৈঠকে এ বিক্ষোভ সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব।
এ সময় মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা জালালুদ্দীন, মুফতি বশিরুল্লাহ, মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মাওলানা মহিউদ্দিন মাসুম, মাওলানা জুবায়ের আহমাদ, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মুফতী কামাল উদ্দীন, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা আব্দুল মালেক, মাওলানা শরিফ উল্লাহ, মুফতী আমিনুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা সানাউল্লাহ খান, মাওলানা শরিফ হোসাইন, মাওলানা বশিরুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ নভেম্বর রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয়। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে পাঠানোর পথে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে দেয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীরা। তাদের সরিয়ে দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণকে কারাগারে নেয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন।
আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি চলমান। এসব কর্মসূচি থেকে ইসকনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে।