• বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন
  • ইপেপার
শিরোনাম:
আমতলী পৌর যুবলীগ সভাপতিসহ তিনজন গ্রেপ্তার! সাংবিধানিক বা আইনগতভাবে এ সরকারের কোনো ভিত্তি নেই আওয়ামী লীগ যেন মিছিল করতে না পারে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসন বিএনপির পক্ষে, তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়: নাহিদ ন্যাশনাল কমেডি পার্টি হয়ে যাচ্ছে এনসিপি: তাসনিম খলিল রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব: সাকিব এবারও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেননি প্রধান উপদেষ্টা: মির্জা ফখরুল আমতলীতে এক বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার থানায় অভিযোগ। আমতলীতে চাদা না দেয়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে আহত। অপারেশন ডেভিল হান্ট, আমতলীতে আ লীগ নেতা গ্রেফতার।

দক্ষিনাঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পাখি দোয়েল

বার্তা বিভাগ বার্তা বিভাগ / ১২৫
বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

এস এম সুমন রশিদ।।

বাংলাদেশের জাতিয় ফল,ফুল,মাছের নাম পরিচিতি থাকার পাশাপাশি পাখিও রয়েছে সেটা হচ্ছে দোয়েল। আর এ দোয়েলকে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি বলা হলেও সঠিক ভাবে পরিচর্যা না থাকার কারনে হারিয়ে ফেলতে হচ্ছে এই পাখিটিকে।
তারই ধারাবাহিকতায় বরগুনা আমতলী উপজেলা থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে মধুর ডাক দেয়া দোয়েলপাখি।

এ দোয়েল পাখি গ্রামের বাঁশঝাড়, নারিকেল, সজনে ঝাড় এমনকি ঘরের ছাউনি বা ছাদে  সব সময় দেখা যেতো।
আমতলী উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন। সাতটি ইউনিয়নের গুলিশাখালি,কুকুয়া, আঠারোগাছিয়া,হলোদিয়া,আরপাঙ্গাসিয়া ও আমতলী সদর ইউনিয়নসহ গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে এ সমস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আগের মত পাখির আনাগোনা নেই।

আর যতগুলো পাখি রয়েছে তাও সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে সেসব পাখিগুলো ।

শিশুর বর্ণমালা পরিচয়ের সময় এই পাখির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে। কালো আর সাদা রঙের ছোট পাখিটির সঙ্গে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য স্মৃতিজড়িত রয়েছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, জলবায়ুর পরিবর্তন, ক্রমান্বয়ে অপরিকল্পিত আবাসস্থল সৃষ্টি, বেআইনি শিকার, শিকারোত্তর চোরাচালান, যত্রতত্র কীটনাশক প্রয়োগ, বিদেশি আগ্রাসনসহ বিভিন্ন কারণ হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পাখি দোয়েল।

শিকারিরা অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করে বন্যপ্রাণী ও পক্ষীকূল হত্যা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন সরকার ১৯৬১ সালে গঠিত বন্যপ্রাণী তহবিল সমতলভূমির বনের অবলুপ্ত রক্ষার্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিভিন্ন উপায় উদ্ভাবন করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, নির্ধারিত বনাঞ্চল সৃষ্টি, উদ্যান প্রতিষ্ঠা, শিকার সংরক্ষিত এলাকা সৃষ্টি, বন্যপ্রাণী নিবাস এবং বিনোদন পার্ক স্থাপন।
দুই টাকার নোটটি খুলেই দেখা যাচ্ছে দোয়েলের মুখটা তবে কাগজে,টাকায়,বিভিন্ন ষ্টেশনারী দোকানে ঝুলিয়ে রাখা প্লাস্টিকের দোয়েল পাখি মন ভরাতে পারছে না দর্শনার্থী বা দোয়েল ভক্তদের।

দোয়েল সাদা-কালোয় সজ্জিত বুলবুল আকৃতির খাটো লেজবিশিষ্ট পাখি। দেশের প্রায় সব জায়গায় দোয়েল দেখতে পাওয়া যেত। পুরুষ দোয়েলের উপরিভাগ চকচকে নীলাভ-কালো। ডানা স্পষ্ট সাদা লম্বা দাগসহ কালচে বাদামি রঙের। লেজ কালো তবে প্রান্তঅংশ সাদা। স্ত্রী দোয়েলের দেহের কালো অংশগুলো বাদামি এবং ময়লা বালির মতো দেখায়। গাছের প্রাকৃতিক খোঁড়লে কিংবা ঝোপঝাড়ে এরা বাসা বাঁধে। সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় ঝোপঝাড়যুক্ত বন, বাগান, গ্রাম তথা লোকালয়ে এদের দেখতে পাওয়া যায়। মিষ্টি মোলায়েম শিস দেয়। লেজের ডগা নাচায়। স্থিরভাবে বসা অবস্থায় দোয়েলের লেজ মোরগের লেজের মতো দেখায়। প্রজনন ঋতুতে পুরুষ দোয়েল খুব ভোরে এবং পড়ন্ত দুপুরে সুরেলা গলায় অত্যন্ত জোরে গান গায়। অন্য পাখির ডাকও এরা নকল করতে পারে। দোয়েল প্রধানত পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ খায়। এপ্রিল থেকে জুলাই মাস এদের প্রজনন ঋতু। স্ত্রী দোয়েল ৩-৫টি ডিম দেয়। সাধারণভাবে ডিমগুলো ফ্যাকাশে মনে হয়।  এই পাখি ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

বাংলাদেশে বহু জাতের ও বহু চরিত্রের পাখির মধ্যে দোয়েলকে জাতীয় পাখি নির্বাচন করা হয়েছে। এর চেহারার সঙ্গে যেমনি, এর স্বভাবের সঙ্গেও তেমনি বাংলার প্রকৃতির যেন চমৎকার মিল খুঁজ পাওয়া যায়। ছোট্ট আকৃতির এ পাখির শরীর প্রায় ছয় ইঞ্চি লম্বা, হালকা-পাতলা শরীর, পা দুটি এত চিকন যেন খিলের মতো। গায়ের রঙ সাদা ও কালোয় মেশানো। পিঠের পালকগুলো মিশকালো, পেটটি ধবধবে সাদা। লেজের আকৃতি শরীরের তুলনায় কিছুটা বড়, তবে ঝোলানো নয়, চামচের মতো।

দোয়েলকে গানের পাখিও বলে। মৃদু স্বভাবের এই পাখিটি প্রকৃতির নিরুত্তাপ আবহাওয়া চলাফেরা করে। তাই আধফোটা ভোর ও সন্ধ্যার আধো আলো আধো অন্ধকারে একে দেখা যায়। এই সুন্দর পাখিটি সবার কাছে বড় আদরের, মর্যাদাটাও অনেক। দোয়েল এক অনাবিল শান্তির প্রতীক।

এতে পাখি সুরক্ষাকারী ও দর্শনার্থীরা জানান, দোয়েল পাখি সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের।
বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় এসব পাখি মানবসৃষ্ট প্রকৃতি বিনষ্টের ফলেই বিলুপ্তির পথে।

পাখি পালনকারী মো: ডিএম আলমাস বলেন,পাখি মনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ছোটবেলা থেকেই আমার প্রিয় শখ পাখি পালন করা। বাড়ির আশেপাশে যখনই দেখতাম বহু ধরনের পাখি আমাদের উঠোনে আসতো।ধরার চেষ্টা করল উড়ে যেত ব্যর্থ হলেও সফল হতো পাখি দেখাটা। তবে পাখি সংরক্ষণের জন্য আইনটা বাস্তবায়ন করা একান্ত দরকার।

পাখির সুরক্ষায় দেশে আইন সচল থাকলেও নেই গুরুত্বের সাথে দেখা। আমরা চাই সেই আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হোক। এমনটাই দাবি করে বলেছেন পাখি সুরক্ষা সচেতন মহল।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সরকারের উচিত আইন প্রণয়ন করে পাখি শিকারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ জোরদার করা, সরকারি-বেসরকারিভাবে পক্ষীকূল সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।তাতে পাখি সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে এমনটাই তাদের দাবি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ

TikTok

জরুরি হটলাইন